খুলনা ওষুধের সবচেয়ে বড় বাজার হেরাজ মার্কেটের পৃথক দুটি কমিটির পিকনিক নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর জের ধরে দুই ব্যবসায়ীদের দোকানে হামলা ও হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপি নেতা নাজমুস সাকিব পিন্টু এ ঘটনার নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় হেরাজ মার্কেট ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বিএনপির মনিটর্রিং সেলে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। তারা হুমকি ও হামলার ভিডিও ফুটেজও জমা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই খুলনার ওষুধ ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ ছিল আওয়ামী লীগ সমর্থিত ব্যবসায়ীদের হাতে। গতবছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাদের অনেকেই চুপসে যান। তখন হেরাজ মার্কেটের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে একটি গ্রুপ। তারা নগর ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ সুজাকে সভাপতি এবং বিএনপি নেতা নাজমুস সাকিব পিন্টুকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ সদস্যের কমিটি গঠন করেন। ব্যবসায়ীদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের নিয়ে কমিটি করায় জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে নাজমুল সাকিব পিন্টুকে তখন শোকজ করা হয়েছিল। এর মধ্যে জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত হলে বিষয়টি ধামাচাপা পড়ে যায়।
এদিকে সাধারণ বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ওই কমিটি মেনে নেয়নি। হেরাজ মার্কেটের ব্যবসায়ীরা পৃথক সভা ডেকে গণতান্ত্রিক ওষুধ ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ নামে পৃথক কমিটি গঠন করেন। এর আহ্বায়ক করা হয় নুরুল হক বাহারকে।
ব্যবসায়ীরা জানান, আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি কুয়াকাটায় বনভোজনের আয়োজন করে ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতি। অন্যদিকে ১৪ ফেব্রুয়ারি জাহানাবাদ সেনানিবাসের বনবিলাস পিককর্নারে বনভোজনের আয়োজন করে গণতান্ত্রিক পরিষদ। ওষুধ ব্যবসায়ীদের এই পিকনিকে অর্থ সহযোগিতা দেয় ওষুধ কোম্পানিগুলো। মূলত পিকনিকের অর্থ ভাগ হয়ে যাওয়ায় গণতান্ত্রিক ওষুধ ব্যবসায়ীদের ওপর ক্ষুব্ধ হয় সুজা-পিন্টু গ্রুপ। গত ৫ ফেব্রুয়ারি তারা দলবল নিয়ে সালমা ড্রাগ হাউস ও খান মুজিবর মেডিসিন কর্নারসহ অন্যান্য দোকানে উপস্থিত হয়ে ব্যবসায়ীদের গালিগালাজ ও লাঞ্ছিত করেন। এ সময় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ সুজা, নাজমুস সাকিব পিন্টুসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
গণতান্ত্রিক ওষুধ ব্যবসায়ী পরিষদের আহ্বায়ক নুরুর হক বাহার বলেন, কয়েকজন বিএনপি নেতার ভর করে হেরাজ মার্কেটে আওয়ামী ও ছাত্রলীগ পুনবার্সিত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ। এখন তারা গায়ের জোরে অন্য ব্যবসায়ীদের সংগঠন বন্ধ করার পায়তারা চালাচ্ছে। বিএনপি নেতাদের কাছে এ ঘটনার বিচার দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতা নাজমুস সাকিব পিন্টু বলেন, মার্কেটের কমিটি পিকনিক করছে। গণতান্ত্রিক পরিষদের নেতাদেরও একসঙ্গে পিকনিক করার অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তারা না শুনে বিভিন্ন কোম্পানিতে ফোন করে সহযোগিতা দিতে নিষেধ করে। বিষয়টি শুনতে ওই দোকানে গিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের একটি অংশ এবং বিএনপির একটি মিলে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বেশিরভাগ ব্যবসায়ী আমার সঙ্গে রয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টিএ